সেলিম সানোয়ার পলাশ, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর মোহনপুরে উত্ত্যক্তের ঘটনায় নবম শ্রেণির স্কুলছাত্রী কুমারি অষ্টমী (১৭) আত্মহত্যা করেছে। স্কুলছাত্রী ঘাসিগ্রামের শ্রী নিমাইয়ের মেয়ে। এই ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে অষ্টমীর বড় ভাই শ্রী সঞ্জয় বাদী হয়ে মোহনপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এই মামলায় শিক্ষক, ইউপি সদস্যসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ওই স্কুলছাত্রীর স্কুলের সহকারি শিক্ষক শরিরত আলী (৪০), ঘাসিগ্রামের দুলাল হোসেন (৪৫), তার স্ত্রী রুবিনা বেগম (৩৫) ও ইউপি সদস্য ওমর আলী (৪৬)। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ওসি জানায়।
ওই স্কুলছাত্রীর ভাবি ইতি কুমারি জানান, গত বুধবার রাতে ঘরে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে তার ননদকে অনেক বার ডাকাডাকির পর কোন সাড়া না পেয়ে অন্য রুমের জানলা দিয়ে দেখতে পান গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে অষ্টমী। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
মোহনপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, স্কুলছাত্রী ছিল হিন্দু পরিবারের মেয়ে। তার সহপাঠি উত্ত্যক্তকারী গোলাম মোস্তফা (১৭)। তারা দু’জন উপজেলা ঘাসিগ্রাম নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গোলাম মোস্তফা বাজেদেওপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে। প্রায় দেড় বছর ধরে সহপাঠি গোলাম মোস্তফা স্কুলছাত্রী কুমারি অষ্টমীকে প্রেম নিবেদন করে আসছিল।
জানা গেছে, গত ২০১৯ সালে ১১ নভেম্বর প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় গোলাম মোস্তফা তার লোকজন নিয়ে স্কুলছাত্রী কুমারি অষ্টমীকে অপরহণ করে। ওইদিন সন্ধ্যায় মোহনপুর থানায় পুলিশ স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রেরণ করে। পরে আদালত থেকে জামিনে আসে মোস্তফা। আবারও স্কুলছাত্রীকে মোবাইল ফোনে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। উত্ত্যক্তকারী গোলাম মোস্তফাকে সহযোগিতা করে তার স্কুলের সহকারি শিক্ষক শরিরত আলীসহ গ্রেপ্তারকৃতরা।
মোহনপুর থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ জানান, ছয় আসামির মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।